Poetics- Aristotle
Poetics- Aristotle - Introduction and chapter 1 - Media of Poetic imitation - bangla translation
এরিস্টটলের পোয়েটিসঃ কাব্যরচনা কলা
সূচনা ও ১ম অধ্যায় বাংলা অনুবাদ
সূচনাঃ অনুকরণ হিসেবে কাব্য
কাব্যরচনা কলা এই সাধারণ শিরোনামে, আমি কাব্যের রূপ সম্পর্কেই শুধু নয়, কাব্যের বিভিন্ন প্রজাতির এবং তাদের বৈশিষ্ঠ্য সম্বন্ধেও আলোচনা করতে চাই। একটি ভাল কাব্যের জন্য প্রয়োজনীয় বৃত্তের গঠনটি কিরূপ হওয়া উচিত, কাব্যের অঙ্গ উপাদান সমূহের সংখ্যা কত এবং তাদের প্রকৃতিই বা কি, এমনি যা কিছুই আমাদের এই জিজ্ঞাসার পরিধির মধ্যে আসতে পারে সবই অনুসন্ধান করে দেখতে চাই। আমি স্বাভাবিক ক্রম অনুসরণ করব এবং প্রাথমিক তথ্যাদি দিয়েই আলোচনার সূত্রপাত করব।মহাকাব্য১, ট্র্যাজেডি২, এমন কি কমেডিও৩, ডিথির্যাম্ব৪ কবিতা এবং বাঁশী ও তারের বাদ্যযন্ত্র সহযোগেগাওয়া যায় এমন অধিকাংশ সঙ্গীতকেই সাধারণভাবে অনুকরণ২ বা উপস্থাপনার নানা রূপ হিসেবেচিহ্নিত করা যেতে পারে। তবে তিনটি বিষয়ে এদের একের সঙ্গে অপরের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়ঃ-অনুকরণের মাধ্যমে, অনকরণের বিষয়ে ও অনকরণের রীতিতে।
কাব্যিক অনুকরণের বিভিন্ন মাধ্যম
তাত্ত্বিক জ্ঞানের বলেই হোক বা দীর্ঘকালীন অভ্যাস ও অনুশীলনের গুণেই হোক, কোন কোন শিল্পী বর্ণ ও রেখার মাধ্যমে এবং কোন কোন শিল্পী কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে নানা বিষয় অনুকরণ ও উপস্থাপন করতে পারেন। আমি যে-সব শিল্পকর্মের কথা বলেছি, সে-সব ক্ষেত্রে অনুকরণ ক্রিয়া নিম্পন্ন হয় ছন্দ, ভাষা এবং সুরের একক পৃথক অথবা সামৱায়িক প্রয়োগের ফলে। যেমন, বাঁশী ও বীণার শিল্পকর্মের প্রকাশ ঘটে সুর-সঙ্গীত ও তাল-লয় সহযোগে। এ ধরনের অন্য যে কোন শিল্পকর্মের বেলাতেও তাই ঘটে, যেমন মেষ পালকের বাঁশীর গানে। নৃত্যশিল্পীদের অনুকরণ-মাধ্যম শুধুই ছন্দ, তাতে সুরের সমর্থন মেলে না। কারণ নৃত্যশিল্পীরা তাদের ছন্দায়িত অঙ্গভঙ্গিমার মাধ্যমেই মানুষের চরিত্র, অনুভূতি ও কর্মধারার অনুকরণ করে থাকে। আর এক ধরনের শিল্পকর্ম আছে যা শুধু ভাষার মাধ্যমেই আপন প্রকাশ খুঁজে ফিরে-সে ভাষা গদ্য১ কিংবা পদ্যই২ হোক, আর সে পদ্য নানা ছন্দের মিশ্রণেই হোক বা একক কোন ছন্দেই রচিত হোক। এই ধরনের শিল্পকর্ম আজ পর্যন্ত কোন বিশেষ নামেই চিহ্নিত হয়নি৩ কারণ আমরা এমন একটি সাধারণ নাম খুজে পাই না যেটি সফ্রোন৪ এবং জেনার্কাস৫ কর্তৃক গদ্যবন্ধে রচিত নাট্যদৃশ্য এবং সক্রেটিস৬ রচিত সংলাপাদির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা চলে। এ গুলো যদি ত্রিমাত্রিক ইয়াম্বিক ছন্দে৭, কিংবা এলিজিয়াক ছন্দে৮ অথবা সদৃশ অন্য কোন ছন্দে রচিত হত, তাহলেও নামকরণের এ সমস্যা থেকে যেত। তবে লোকে একজন লেখককে সাধারণভাবে কবি বলে অভিহিত করে থাকে, তাঁর লেখায় ব্যবহৃত ছন্দের নিরিখে, যেন অনুকরণ নয়, ছন্দই কবিত্বের বিলক্ষণ ব্যাপার। গ্রীক ভাষায় বিশেষ ছন্দেরনামের সঙ্গে "কবি" শব্দটি যুক্ত করে “এলিজিয়াক ছন্দের কবি", “ষান্মাত্রিক ছন্দের কবি' ইত্যাদি ধরনেরনাম প্রয়োগের দৃষ্টান্ত থেকে তাই মনে হয়। তারপর কেউ যদি ভৈষজ্য-বিদ্যা কিংবা প্রকৃত বিজ্ঞান বিষয়ক নিবন্ধও পদ্যে রচনা করে থাকেন, তাঁকেও কবি হিসেবে আখ্যায়িত করা প্রথাসিদ্ধ ব্যাপার। অথচ এও তো সত্য যে হোমার৯ এবং এম্পিডোক্লিস১০, এর মধ্যে ছন্দ ছাড়া অন্য কোন ব্যাপারেই মিল নেই। সুতরাং এদের একজনকে কবিরূপে চিহ্নিত করাই যেমন যুক্তিযুক্ত, অন্যজনকে কবি না বলে, প্রকৃতিবিজ্ঞানী বলাই সুসঙ্গত। এই সূত্র অনুসারেই বলা যায় যে চেইরিমোন১১ তাঁর সেন্টর নামক অপরূপ প্রশংসা গীতি রচনায় যেমন সব রকম ছন্দের এক সমাহার ঘটিয়েছেন তেমনি সকল ছন্দের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে যদি অন্য কোন লেখক তাঁর অনুকরণ ক্রিয়া নিষ্পন্ন করে থাকেন, তবে তাঁকেও সমভাবে কবি নামে অভিহিত করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্মের পার্থক্য বিষয়ে এই হচ্ছে আমার বক্তব্য। আবার এমন ধরনের কিছু শিল্পকর্ম রয়েছে যাতে পূর্ববর্ণিত সকল মাধ্যম অর্থাৎ ছন্দ, সুর এবং মাত্রা সবকিছুরই প্রয়োগ ঘটে থাকে। যেমন ঘটে থাকে ডিথির্যাম্ব এবং নোমিক কবিতা, ট্র্যাজেডি এবং কমেডির বেলায়। তবে এদের পারস্পরিক পার্থক্য এইখানে যে ডিথির্যাম্ব ও নোমিক কবিতায়১০ যেখানে সবগুলো মাধ্যম যুগপৎ প্রযুক্ত হয় ট্র্যাজেডি ও কমেডির ক্ষেত্রে তা একের পর এক পৃথকভাবে ব্যবহৃত হয়। অনুকরণ ও উপস্থাপনার মাধ্যমের ভিত্তিত্বে কলাসমূহের পারস্পরিক পার্থক্য বলতে আমি এসবই বোঝাতে চাই।
Comments
Post a Comment